খোলা কলামNews

অসহযোগ আন্দোলন ও বাংলাদেশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

অসহযোগ আন্দোলন ও বাংলাদেশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং তাদের পরিচয়

২০২৪ সালের অসহযোগ আন্দোলনের ফলস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সংগঠিত অস্থায়ী সরকারব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিশ্চিত হয়। সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে। বাংলাদেশে গণ-আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটার পর রাজনৈতিক দলগুলোর দাবির মুখে ইতোমধ্যেই সংসদ ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এবং রাজনৈতিক দলের নেতার প্রস্তাব অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।


এসময় বঙ্গভবনে বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৩ জন সমন্বয়ক- মো. নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, আবুবকর মজুমদার, নুসরাত তাবাসসুম, খান তালাত মাহমুদ রাফি, আরিফ সোহেল, মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী, মাহফুজ আলম, নাজিফা জান্নাত, আবু সাদিক, ইভান তাহসির অংশ নেন।

ইতোমধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। বাকি ১৬ জনকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

★ সংবিধানে কী আছে :-

বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’ নামে কোনও ব্যবস্থার উল্লেখ নেই। তবে কাছাকাছি ধরনের একটি ব্যবস্থার কথা আগে বলা ছিল, যেটি ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা নামে পরিচিত। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান ও ক্ষমতা হস্তান্তরের লক্ষ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান-সংবলিত বাংলাদেশের সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধন আইন, ১৯৯৬ সালে পাস হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের চতুর্থ ভাগে ‘২ক পরিচ্ছদ: নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ নামে নতুন পরিচ্ছেদ যোগ হয়।

★অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যারা থাকছেন :

প্রধান উপদেষ্টা : ড. মুহাম্মদ ইউনূস
★উপদেষ্টামন্ডলিগন
১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ
২. ড. আসিফ নজরুল
৩. আদিলুর রহমান খান
৪. হাসান আরিফ
৫. তৌহিদ হোসেন
৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান
৭. মো. নাহিদ ইসলাম
৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন-
১০. সুপ্রদিপ চাকমা
১১. ফরিদা আখতার
১২. বিধান রঞ্জন রায়
১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান
১৪. নুরজাহান বেগম
১৫. শারমিন মুরশিদ
১৬. ফারুকী আযম

আসুন আমরা সংক্ষিপ্ত পরিসরে তাদের জীবনী জেনে নেই।

১: ডঃ ইউনুসের সংক্ষিপ্ত পরিচয় : মুহাম্মদ ইউনুস ১৯৪০ সালের ২৮ জুন ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্টগ্রামের হাটহাজারির কাপ্তাই সড়কের বাথুয়া গ্রামে একটি বাঙালি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। নয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তাঁর পিতা হাজী দুলা মিয়া সওদাগর ছিলেন একজন জহুরি, এবং তাঁর মাতা সুফিয়া খাতুন। তার শৈশব কাটে গ্রামে।

১৯৪৪ সালে তার পরিবার চট্টগ্রাম শহরে চলে আসে এবং তিনি তার গ্রামের স্কুল থেকে লামাবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলে যান। ১৯৪৯ সালের দিকে তার মা মানসিক অসুস্থতায় ভুগতে শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং পূর্ব পাকিস্তানের ৩৯ হাজার ছাত্রের মধ্যে ১৬তম স্থান অধিকার করেন।
বিদ্যালয় জীবনে তিনি একজন সক্রিয় বয় স্কাউট ছিলেন এবং ১৯৫২ সালে পশ্চিম পাকিস্তান ও ভারত এবং ১৯৫৫ সালে কানাডায় জাম্বোরিতে অংশগ্রহণ করেন। পরে, যখন ইউনুস চট্টগ্রাম কলেজে পড়াশোনা করছিলেন, তখন তিনি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হন এবং নাটকের জন্য পুরস্কার জিতেন। ১৯৫৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৬০ সালে বিএ এবং ১৯৬১ সালে এমএ সম্পন্ন করেন।

প্রাথমিক কর্মজীবন তথা সুদ যেখান থেকে শুরু: ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি জোবরা গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় ইউনুস আবিষ্কার করেন যে খুব ছোট ঋণ দরিদ্র মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

গ্রামের মহিলারা যারা বাঁশের আসবাব তৈরি করতেন, তাদের বাঁশ কিনতে উচ্চ সুদে ঋণ নিতে হতো এবং তাদের লাভ ঋণদাতাদেরকে দিতে হতো। প্রথাগত ব্যাংকগুলো দরিদ্রদেরকে উচ্চ ঋণখেলাপির ঝুঁকির কারণে যুক্তিসঙ্গত সুদে ছোট ঋণ দিতে চায়নি।

কিন্তু ইউনুস বিশ্বাস করতেন যে, সুযোগ পেলে দরিদ্ররা উচ্চ সুদ পরিশোধ করতে হবে না, তাদের নিজেদের পরিশ্রমের লাভ রাখতে পারবে সেজন্য ক্ষুদ্রঋণ একটি কার্যকর ব্যবসায়িক মডেল হতে পারে। ইউনুস তার নিজের টাকা থেকে ২৭ মার্কিন ডলার ঋণ দেন গ্রামের ৪২ জন মহিলাকে, যারা প্রতি ঋণে ০.৫০ টাকা (০.০২ মার্কিন ডলার) লাভ করেন। যেজন্য ইউনুসকে ক্ষুদ্রঋণের ধারণার জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

নোবেল পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন : মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেন।ইউনুস পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬২টি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়।এমন সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুহাম্মদ ইউনুসকে বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে প্রস্তাব করে পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন এতে সম্মতি জ্ঞাপন করেন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তাকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২: ডঃ সালেহ উদ্দিন : তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর (দরিশ্রীরামপুর) গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। শিক্ষাজীবন:—– তিনি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন।

১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স পাস করেন এবং ১৯৬৯ সালে একই বিষয়ে এমএ পাস করেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডারে যোগ দেন।

১৯৭৮ সালে কানাডার হ্যামিল্টন শহরে অবস্থিত ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ★ কর্ম জীবন :—-সালেহ উদ্দিন ছিলেন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’-এর নবম গভর্নর; ড. ফখরুদ্দীন আহমদ দায়িত্ব ত্যাগের পর তিনি ২০০৫ সালের ১ মে গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই পদে অধিষ্টিত থাকেন।

৩: ডঃ আসিফ নজরুল : আসিফ নজরুল । তিনি জন্মগ্রহন করেন ১২ জানুয়ারি ১৯৬৬ সালে। একজন বাংলাদেশি লেখক, ঔপন্যাসিক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট। জীবিকাসূত্রে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক। জন্মসূত্রে তার নাম মোঃ নজরুল ইসলাম। টিভি টক-শো ও তার কলামে সাহসী রাজনীতি বিশ্লেষণের জন্য তিনি বিশেষভাবে খ্যাত।

তিনি দশের অধিক গ্রন্থের রচয়িতা শিক্ষাজীবন:—আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮৬ সালে স্নাতক ও ১৯৮৭ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ১৯৯৯ সালে সোয়াস (স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে জার্মানীর বন শহরের ইনভায়রনমেন্টাল ল’ সেন্টার থেকে তিনি পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে একজন কমনওয়েলথ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন।

৪: আবুল ফয়েজ মুহাম্মদ খালিদ হোসেন (যিনি ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন নামে সর্বাধিক পরিচিত) জন্ম: ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯সালে। একজন বাংলাদেশি সুন্নী দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত ও বিজ্ঞ আলেম, ও ইসলামিক স্কলার। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা, মাসিক আত তাওহীদের সম্পাদক, বালাগুশ শরকের সহকারী সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের কুরআনিক সায়েন্সেস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অতিথি শিক্ষক।

তিনি ওমরগণি এমইএস কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের খণ্ডকালীন অধ্যাপক এবং নেজামে ইসলাম পার্টির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। বিশ্ব মুসলীম লীগের মুখপাত্র দ্যা ওয়ার্ল্ড মুসলিম লীগ জার্নাল সহ বিভিন্ন সাময়িকীতে তার দুই শতাধিক গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত ইসলামী বিশ্বকোষ দ্বিতীয় সংস্করণের ৩ থেকে ৯ খণ্ড ও সীরাত বিশ্বকোষ সম্পাদনা করেছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২০ টি। এছাড়াও তিনি ৪টি জাতীয় পত্রিকার নিয়মিত লেখক।

৫: আদিলুর রহমান : আদিলুর রহমান খান । জন্ম: ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২ সালে। তিনি একজন মানবাধিকার কর্মী এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বাংলাদেশের একজন আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল হোসেন মোহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশগ্রহণ করেছিলেন।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। কর্মজীবন :—- আদিলুর রহমান খান এবং সুশীল সমাজের অন্যান্য সদস্যরা ১০ অক্টোবর, ১৯৯৪ সালে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন ।তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল – বাংলাদেশ জামায়াত-ই-ইসলামী সরকার কর্তৃক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন।

২০০৫ সালের ডিসেম্বরে, তিনি একটি মামলায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন যেখানে হাইকোর্ট সরকারকে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের দ্বারা বিচার বিভাগীয় বোমা হামলা থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিতে বলেছিল। তিনি ১৪ মে ২০০৭ এ তার পদ থেকে পদত্যাগ করেন।


২০১৩ সালে, হেফাজতে -ইসলাম বাংলাদেশ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর আন্দোলনের সময় নেতা-কর্মীদের অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ জন্য তার বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে, ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর থেকে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বিক্ষোভকারীদের সরাতে সরকারী পদক্ষেপের জন্য দায়ের করা একটি মামলায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল দ্বারা তিনি এবং নাসিরুদ্দিন এলানকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ১০,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। ফ্রান্স ও জার্মানি এই রায়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আইনজীবী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এই রায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

৬: হাসান আরিফ : তিনি ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।হাসান আরিফ বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। আরিফ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কলকাতা থেকে তার মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
হাসান আরিফ অক্টোবর ২০০১ থেকে এপ্রিল ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি জানুয়ারি ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।

৭: তৌহিদ হোসেন: মোঃ তৌহিদ হোসেন ।বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের একজন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব।তৌহিদ হোসেন ১৯৫৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারীতে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। কর্মজীবন :—– ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি ২০০০ পর্যন্ত, হোসেন ফরেন সার্ভিস একাডেমির প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার ছিলেন।

১৭ ডিসেম্বর ২০০৬ থেকে ৮ জুলাই ২০০৯ পর্যন্ত, হোসেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন। ২০০৭ সালের ২৯ থেকে ৩০ আগস্ট পাকিস্তানে তিনি একটি প্রতিনিধিদলের সভায় যোগদান করেন, তার বিপরীতে পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন রিয়াজ মোহাম্মদ খান। জুলাই ২০০৯ থেকে জুলাই ২০১২ পর্যন্ত, হোসেন ফরেন সার্ভিস একাডেমির প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

জুন ২০১২ সালে, হোসেন দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নিযুক্ত হন। তৌহিদ হোসেন ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস ইন্টারন্যাশনাল মডেল ইউনাইটেড নেশনস-এর প্রধান অতিথি ছিলেন। ২০২১ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স আয়োজিত বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি বিষয়ক সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন।

৮: সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান: রিজওয়ানা হাসানের পৈতৃক নিবাস হবিগঞ্জ। তিনি ১৯৬৮ সালের ১৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ মহিবুল হাসান। তার স্বামী আবু বকর সিদ্দিক একজন ব্যবসায়ী।


শিক্ষাজীবন : রিজওয়ানা হাসান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। সেখান থেকে ব্যাচেলর ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৯৩ সালে এলএলএম সম্পন্ন করার পর বাংলাদেশের বাইরে বেশ কয়েকটি ফেলোশিপ কোর্স সম্পন্ন করেছেন।

২০০৭ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আইজেনহাওয়ার ফেলোশিপ করেন। রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী এবং একজন পরিবেশবিদ। তিনি বেলার প্রধান নির্বাহী ছাড়াও ফেডারেশন অব এনজিওস ইন বাংলাদেশ-এর সহসভাপতি।

এছাড়া তিনি ‘নিজেরা করি’ সংগঠন ও অ্যাসোসিয়েশন অব ল্যান্ড রিফর্মস অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট-এর একজন সদস্য। এছাড়া তিনি আন্তর্জাতিকভাবে ফ্রেন্ডস অব আর্থ ইন্টারন্যাশনাল-এর নির্বাহী সদস্য; এনভায়রনমেন্টাল ল’ অ্যালায়েন্স ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং এনভায়রনমেন্টাল ল’ কমিশন অফ দ্য আইইউসিএন-এর সদস্য।

৯: নাহিদ ইসলাম: শ্যামলা গালের ওপর চাপদাড়ি। মাথায় ঢেউখেলানো কালো চুল। শান্ত, উজ্জ্বল চোখ। ছাত্র-যুবদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় তাঁর মাথায় বাঁধা থাকে বাংলাদেশের পতাকা। তিনি বাংলাদেশের (Bangladesh) দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধের সেনাপতি তথা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক (Student leader) নাহিদ ইসলাম।

ব্যাক্তিগত জীবন : নাহিদ ইসলামের ডাকনাম “ফাহিম”। তার জন্ম ১৯৯৮ সালে ঢাকায়। বাবা শিক্ষক। মা ঘর সামলে সন্তানদের মানুষ করেছেন। ছোট এক ভাই রয়েছে তাঁর।তিনি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন তিনি। নাহিদ বিবাহিত। আন্দোলনকারী ছাড়াও নাহিদ ইসলামের রয়েছে রাজনৈতিক পরিচয়। তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় নেতা।

নাহিদ ইসলাম হলেন একজন বাংলাদেশী আন্দোলনকর্মী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন ও সফল হোন। মাত্র ২৬ বছর বয়সে স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। হয়ে উঠেছেন দেশের সর্বস্তরের মানুষের অন্যতম নেতা।

জুলাই মাসেও নাহিদ ততটা পরিচিত মুখ ছিলেন না। কিন্তু জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে তাকে অপহরণ করা হলে দেশব্যাপী তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন। কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে তাকে দু’বার আটক করা হয়। এ সময় তিনি অকথ্য নির্যাতনেরও শিকার হন। তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা। নাহিদের নেতৃত্বেই শেষে একদফা দাবিতে পথে নামেন পড়ুয়ারা। পাশে দাঁড়ান বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ। পদ এবং শেষে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা।

কিন্তু তারপরেও মাঠ না ছেড়ে নাহিদ বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। কিন্তু যতক্ষণ না পর্যন্ত ছাত্রদের দাবিমতো নতুন সরকার তৈরি হচ্ছে, ততক্ষণ অভ্যুত্থানের পথ থেকে ছাত্রদল সরবে না। হামলা ও লুঠতরাজের নিন্দা করে গুন্ডাদের রুখে দেওয়ার বার্তা দেন মুক্তিকামী ছাত্র-জনতাকে।

আয়নাঘরে নাহিদ : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, তাকে গুম করে ‘আয়নাঘরে’ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ বিষয়টি জানিয়েছেন।
নাহিদ লিখেছেন, ‘আমাকে গুম করে ২৪ ঘণ্টার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এই কথিত আয়নাঘরে। স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা কোনো আয়নাঘর দেখতে চাই না।’

১০: আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এবং আলোচিত সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। আন্দোলনের সময় সামাজিকমাধ্যমে বেশ সরব দেখা গেছে তাকে। বিভিন্ন সময় ফেসবুক লাইভে এসে আন্দোলনকারীদের নির্দেশনা দিয়েছেন আসিফ। পুরো নাম আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আসিফ মাহমুদের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর গ্রামে।

তার পিতার নাম মোঃ বিল্লাল হোসেন ও মাতার নাম রোকসানা বেগম। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও কলেজটির বিএনসিসি ক্লাবের প্লাটুন সার্জেন্ট ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আসিফ ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’র কেন্দ্রীয় নেতা। ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের নেতৃত্বে ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর আত্মপ্রকাশ করে দলটি। কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র সমন্বয়ক থেকে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা’ হয়েছেন তিনি।

১১: ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন: ১৯৪৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন। ১৯৬৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রায় দু’বছর পাকিস্তানের বন্দি শিবিরে কাটিয়ে ১৯৭৩ সালে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং ১৯৭৫ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ৪৬ ব্রিগেডে স্টাফ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

তিনি ১৯৭৯-৮১ সালে ঢাকায় সেনাসদরে গুরুত্বপূর্ণ পদে অপারেশন ডাইরেক্টরেট নিয়োজিত হন। পরে তিনি ব্রিগেডের অধিনায়ক হিসেবে দুটি ইনফেনট্রি ব্রিগেড ও একটি আর্টিলারি ব্রিগেডের অধিনায়ক ছিলেন।

লেখক বাংলাদেশের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করে দ্বিতীয়বারের মত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিখ্যাত ইউ এস এ কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ জেনারেল কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিফেন্স এ ডি সি ইসলামাবাদ ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে মাস্টার্স এবং ২০১১ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্, ঢাকা থেকে এমফিল ডিগ্রি লাভ করেন এম সাখাওয়াত হোসেন।

তিনি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে নিরাপত্তা, ভূ-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী কলাম ও বইয়ের লেখক হিসেবে অধিক পরিচিত। তাছাড়া দেশি-বিদেশি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনীতি এবং নির্বাচন বিষয়ে বিশ্লেষক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। এছাড়া ২০০৭ সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর তিনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১২: সুপ্রদীপ চাকমা: সুপ্রদীপ চাকমার জন্ম ১৯৬১ সালে খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে। তিনি সাবেক রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তিনি বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে কর্তব্যরত রয়েছেন। ২০২৩ সালে ২৪ জুলাই তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি সপ্তম বিসিএসে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত ছিলেন সুপ্রদীপ চাকমা। এ ছাড়া রাবাত, ব্রাসেলস, আঙ্কারা এবং কলম্বোতে বাংলাদেশ মিশনেও তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।

১৩: ফরিদা আখতার :
ফরিদা আখতার বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা ও উবিনীগ তথা উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা এর নির্বাহী পরিচালক। তার জন্ম চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ থানার হারলা গ্রামে।শিক্ষা : ফরিদা আখতার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করেছেন।
কর্মজীবন:-বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের অবস্থা জানা এবং পরিবর্তনের জন্য নীতিনির্ধারণী গবেষণা ও লেখালেখিই ফরিদা আখতারে কাজের প্রধান জায়গা। নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য সম্পদ, তাঁতশিল্প, গার্মেন্টস শিল্প ও শ্রমিক, জনসংখ্যা এবং উন্নয়নমূলক বিষয়ে নিবিড়ভাবে দীর্ঘ প্রায় তিন দশক ধরে কাজ করছেন তিনি।

১৪: বিধান রঞ্জন রায়: তিনি বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক।প্রাথমিক জীবন :—–তিনি ১৯৬৩ সালে সুনামগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে সুনামগঞ্জ জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৮১ ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।

এছাড়া তিনি ১৯৮৮ সালে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। কর্মজীবন:-তিনি পূর্বে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন।

১৫: মিসেস নূর জাহান বেগম:
মিসেস নূর জাহান বেগম ২০১০ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। এর আগে তিনি নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সালে যখন নূর জাহান বেগম গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরু করেন তখন তিনি ড. ইউনূসের প্রথমসারির সহযোগীদের একজন ছিলেন।

মিসেস নুরজাহান, যিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের তৃণমূল গোষ্ঠীতে দরিদ্র গ্রামীণ মহিলাদের সংগঠিত ও প্রশিক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ব্যাংকের শুরুর দিকে এবং সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং দিনে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রথম ‘প্রিন্সিপাল’ ছিলেন। নূর জাহান বেগম অনেক দেশে মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রামের পরামর্শদাতা, প্রশিক্ষক এবং মূল্যায়নকারী হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মেলন এবং সেমিনারে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশন, ইউএসএসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার বোর্ডেও দায়িত্ব পালন করছেন।

১৬: শারমিন মুরশিদ: শারমিন মুরশিদ বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি শেখ হাসিনা সরকারের সময় নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার নানা অনীয়ম নিয়ে কথা বলেন। দেশী বিদেশী গণমাধ্যমে তার মতামত ও পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে প্রচার হয়। সবশেষ ৭ জানুয়ারী ২০২৪ এর নির্বাচন বিষয়ে আমেরিকার একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন আমি এই নির্বাচনকে নির্বাচন বলি না। বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হয়।

১৭: ফারুকী আযম: নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম সদস্য নৌকমান্ডো বীর প্রতীক ফারুক-ই আজম। তার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারীতে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন ফারুক-ই-আজম। সে সময় খুলনায় ছিলেন তিনি। যুদ্ধ শুরু হলে অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে চট্টগ্রামে পৌঁছান ফারুক-ই-আজম।

৬ মে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের হরিণা ইয়ুথ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন তিনি। এ সময় একদিন শুনলেন, পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে নৌবাহিনীর জন্য মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রহ করা হচ্ছে। লাইনে দাঁড়িয়ে যান তিনি। পলাশীতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট ‘অপারেশন জ্যাকপট’এর জন্য তাকে মনোনীত করা হয়। অপারেশন জ্যাকপটে চট্টগ্রামের বন্দর আক্রমণকারী অভিযানিক দলের উপঅধিনায়ক ছিলেন ফারুক-ই আজম।যতটুকু জানতে পেরেছি সংগ্রহ করতে পেরেছি ততটুকুই লিখার চেষ্টা করেছি। কোথাও রদবদল বা ভুল দৃষ্টিগোচর হলে সংশোধনের নজরে দেখার আবেদন রয়লো। Read more news

-সাজিদুর রহমান

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button